নিউ ইয়র্ক: প্রতিদ্বন্দ্বী দুই উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং ও এয়ারবাসের কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস। এ বিষয়ে তিন প্রতিষ্ঠান চুক্তির দ্বারপ্রান্তে।
স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস ২০০৫ সাল পর্যন্ত বোয়িংয়ের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ছিল। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বোয়িং ও এয়ারবাসসহ বিভিন্ন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে। এর মধ্যে বোয়িং তাদের কাছ থেকে মূলত উড়োজাহাজের ‘ফিউজেলাস’ (আরোহীদের বসার মূল অবকাঠামো) কেনে। অন্যদিকে এয়ারবাসের কাছে মূলত উড়োজাহাজের ডানা সরবরাহ করে স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস।
চুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এয়ারবাসের ‘এ২২০’ ও ‘এ৩৫০’ উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ তৈরির জন্য স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস বিভিন্ন দেশে কারখানা তৈরি করেছে। এয়ারবাস মূলত এসব স্থাপনা কিনে নিচ্ছে। এর মধ্যে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে অবস্থিত কারখানাও রয়েছে। চুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের একজন বলেন, ‘আলোচনা সঠিক পথেই এগোচ্ছে। চলতি সপ্তাহেই চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে।’
বোয়িং যেসব স্থাপনা কিনে নিতে যাচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কানসাসে অবস্থিত স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের সবচেয়ে বড় কারখানাটিও রয়েছে।
গত জানুয়ারিতে মাঝ আকাশে বোয়িংয়ের ‘৭৩৭ ম্যাক্স’ মডেলের একটি উড়োজাহাজের জানালা খুলে পড়ে। মূলত এর পর থেকেই উড়োজাহাজের নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চাপে রয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে গত মার্চে তারা স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। বোয়িং ও স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস উভয় প্রতিষ্ঠানেই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ চলাচলের নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থার নিরীক্ষা চলছে।
জানুয়ারির ঘটনার পরই ‘৭৩৭ ম্যাক্স’ মডেলের উড়োজাহাজ তৈরি মন্থর করে দেয় বোয়িং। এ কারণে ফিউজেলাস সরবরাহ কমে যায় স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রায় ৬১ কোটি ডলার লোকসান গুনতে হয় প্রতিষ্ঠানটিকে। স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমস সর্বশেষ বার্ষিক মুনাফা করেছিল ২০১৯ সালে।
এদিকে বোয়িং ও এয়ারবাসের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়ার খবরে স্পিরিট অ্যারোসিস্টেমসের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম বেড়ে যায় ৪ দশমিক ১ শতাংশ।