ইউএস-বাংলার সাফল্যগাঁথা ১০ বছর, সর্বোচ্চ যাত্রীসেবার অঙ্গীকার

বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা অতিক্রম করেছে সাফল্যগাঁথা ১০টি বছর। আজ ১৭ জুলাই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ১১তম বর্ষে পদার্পণ করছে।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের আকাশপথে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করেছে ইউএস-বাংলা।

অভ্যন্তরীণ রুট ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরুর দুই বছরের মধ্যে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে ডানা মেলে। ইউএস-বাংলার আন্তর্জাতিক রুটগুলোর মধ্যে রয়েছে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, জেদ্দা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু। 

নিকট ভবিষ্যতে দিল্লি, রিয়াদ ও দাম্মাম রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এছাড়া, ২০২৫ সালের মধ্যে লন্ডন, রোমসহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্য এবং ২০২৭ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক ও টরন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বর্তমান বিশ্বে যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদান করার জন্য ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফটের কোনো বিকল্প নেই। ইউএস-বাংলা যাত্রীদের আরামদায়ক সেবাকে নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করে চলেছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।

তিনি বলেন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যে ভরা ১০ বছরের সাথে যেসব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিক, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, তাদের সবার প্রতি ইউএস-বাংলা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।

বর্তমানে ইউএস-বাংলার বিমান বহরে মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে দুইটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০, ১০টি এটিআর ৭২-৬০০ এবং তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯০ শতাংশর অধিক অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলার। 

যাত্রীসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করায় ইউএস-বাংলা দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে যাত্রীদের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ইউএস-বাংলার, যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া, নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরো সুদৃঢ়।

ইউএস-বাংলার টিকিট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস সুবিধা। দেশে এবং দেশের বাহিরে নিজস্ব ৪০টির অধিক সেলস অফিস রয়েছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে ‘স্কাইস্টার’ প্রোগ্রাম।  

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স খুব শিগগিরই নিজস্ব এমআরও (মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার এন্ড অপারেশনস) প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে ইউএস-বাংলা ফ্লাইং স্কুল ও ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।
 
স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলা-ই প্রথম কোনো দেশীয় বিমান সংস্থা, যা চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাই কিংবা মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। 

উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি। ‘আপনি লাগেজের জন্য অপেক্ষা করবেন না বরং লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে’- এই ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

  • Related Posts

    সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী হচ্ছেন হাবিবুর রহমান

    বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষের (বেবিচকে) প্রধান প্রকৌশলী হচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান। বৃহস্পতিবার ডিপিসির এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয় বেবিচক কতৃপক্ষ। বৈঠকে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজকে ছুটিতে…

    বিমানে বসেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেশের ১৭০ চক্ষু চিকিৎসক

    চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করা ‘অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল’- এ চলছে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। যেখানে অংশ নিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের ১৭০ জন চক্ষু চিকিৎসক। গত ১৭ নভেম্বর থেকে…

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    You Missed

    সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী হচ্ছেন হাবিবুর রহমান

    • By admin
    • November 23, 2024
    • 6 views
    সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী হচ্ছেন হাবিবুর রহমান

    বিমানে বসেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেশের ১৭০ চক্ষু চিকিৎসক

    • By admin
    • November 23, 2024
    • 6 views
    বিমানে বসেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন দেশের ১৭০ চক্ষু চিকিৎসক

    ‘মুভ টু -১৫˚সি’ উদ্যোগে যুক্ত হলো এমিরেটস

    • By admin
    • November 23, 2024
    • 8 views
    ‘মুভ টু -১৫˚সি’ উদ্যোগে যুক্ত হলো এমিরেটস

    সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের টিকিটে বড় ছাড়, ভিসা না পেলে টাকা ফেরত

    • By admin
    • November 23, 2024
    • 8 views
    সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের টিকিটে বড় ছাড়, ভিসা না পেলে টাকা ফেরত

    দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে স্পিরিট এয়ারলাইনস

    • By admin
    • November 21, 2024
    • 60 views
    দেউলিয়াত্বের আবেদন করেছে স্পিরিট এয়ারলাইনস

    শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবেশের সব নিরাপত্তা পাস স্থগিত

    • By admin
    • November 20, 2024
    • 11 views
    শাহজালাল বিমানবন্দরে প্রবেশের সব নিরাপত্তা পাস স্থগিত