ওয়াশিংটনঃ কভিড-১৯ মহামারীর পর প্রায় ১ লাখ ৯৪ হাজার কর্মী নিয়োগ দেয় যাত্রী পরিবহন করা মার্কিন এয়ারলাইনসগুলো। সম্প্রতি এসব এয়ারলাইনস লোকবল নিয়োগের হার কমিয়ে দিয়েছে।
মার্কিন এয়ারলাইনসগুলোয় যে পরিমাণ জনবল প্রয়োজন, বর্তমানে তার কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। তার পরও নতুন কিছু চ্যালেঞ্জের কারণে কর্মী নিয়োগের গতি মন্থর রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ফ্লাইট সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া কমাতে হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে এয়ারলাইনসগুলোর মুনাফায়। নতুন ফ্লাইটের চাহিদাও খুব একটা বাড়ছে না। সময়মতো উড়োজাহাজ সরবরাহ করতে পারছে না বোয়িং ও এয়ারবাস। এর ফলে ব্যবসার পরিধি বিস্তৃত করার ব্যাপারে এয়ারলাইনসগুলোকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। উড়োজাহাজের ইঞ্জিন সরবরাহেও ঘাটতি রয়েছে। ফলে কিছু প্রতিষ্ঠানকে উড়োজাহাজ সরবরাহ একেবারে বন্ধ রাখতে হচ্ছে। আবার নতুন চুক্তির ফলে পাইলট ও মেকানিকদের একটা অংশের বেতন-ভাতা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
এভিয়েশন খাতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কিট ডার্বির পরিসংখ্যান বলছে, মাঝারি আকারের উড়োজাহাজ পরিচালনায় তিন বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন ফার্স্ট অফিসারের বার্ষিক বেতন ২০১৯ সালে ছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৬ ডলার। গত মার্চে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৬ ডলারে।
রেমন্ড জেমসের এয়ারলাইন বিশেষজ্ঞ সাবান্তি সিথ জানান, ২০১৯ সাল থেকেই মার্কিন এয়ারলাইনসগুলোর খরচ বৃদ্ধির হার দুই অংকের ঘরে রয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য ও সুদহার বৃদ্ধির বাইরেও এ বছর আমেরিকান এয়ারলাইনসের ব্যয় ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বাড়বে। অন্যদিকে ২৮ শতাংশ করে ব্যয় বাড়তে পারে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস ও ডেল্টা এয়ারলাইনসের।
সিথের তথ্যানুযায়ী, তুলনামূলক ছোট কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধির হার আরো বেশি। সেক্ষেত্রে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের খরচ বাড়তে পারে ৩২ শতাংশ। ৩৫ শতাংশের মতো বাড়বে জেটব্লু এয়ারওয়েজের খরচ। আর ৩৯ শতাংশ খরচ বাড়তে পারে স্পিরিট এয়ারলাইনসের।
এদিকে মার্কিন শ্রমবাজারের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, উড়োজাহাজ খাতে কর্মী নিয়োগের হার জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে কোনো উন্নতি ঘটেনি। বরং এ খাতের জন্য হতাশার খবর হলো, চলতি মাসে কাজ না থাকায় ১৮৬ পাইলটকে ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছে স্পিরিট এয়ারলাইনস। এর বাইরে আরো একাধিক এয়ারলাইনস খরচ কমাতে নিয়োগ কমানোর পাশাপাশি অন্য উপায় খুঁজছে।
ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইনস এখনো পাইলট নিয়োগ দিচ্ছে। তবে গত মাসে ঘোষণা দেয়, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে যে কেউ স্বেচ্ছায় ছুটিতে থাকতে পারবেন। কারণ এ সময়টায় ফ্লাইটের চাহিদা কমে যায়। অন্যদিকে লোকবল কমতে পারে সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসেও। ধারণা করা হচ্ছে, এবার বছর শেষে তাদের মোট লোকবল ২০২৩ সালের চেয়ে প্রায় দুই হাজার কমতে পারে।