ঢাকাঃ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ আর মাত্র ২ শতাংশ বাকি রয়েছে। এই কাজটুকু সম্পন্ন হলেই টার্মিনালটি পুরোপুরি চালু হবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুতেই এটি উদ্বোধন করা সম্ভব হবে। নতুন টার্মিনালটি চালু হলে বছরে প্রায় দুই কোটি যাত্রী বিমানবন্দরটি ব্যবহার করতে পারবেন। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, করোনার সময় অন্যান্য আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতোই শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। তবে অতিমারি নিয়ন্ত্রণে আসার পর পরিস্থিতি দ্রুত বদলাতে শুরু করে এবং যাত্রী সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
২০২০ সালে যেখানে যাত্রী সংখ্যা ছিল ৩০ লাখের কিছু বেশি, তা ২০২১ সালে ৩৮, ২০২২ সালে ৭০ লাখের কিছু বেশি ও ২০২৩ সালে বেড়ে ৯০ লাখের ঘরে চলে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের শুরু থেকে যে পরিমাণ যাত্রী যাতায়াত করছে, তাতে বছর শেষে এ সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যাবে। আর আগামী বছরের শুরুর দিকে বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল চালু হলে যাত্রী সংখ্যা বেড়ে হবে দ্বিগুণ।
বর্তমানে প্রতিদিন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ১৬০ থেকে ১৭০টি উড়োজাহাজ যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। আর কার্গো মিলিয়ে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০টি উড়োজাহাজ শাহজালাল বিমানবন্দর ব্যবহার করছে।
এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী দেশের সবচেয়ে বড় এই বিমানবন্দর ব্যবহার করছেন। আমাদের সেবার পরিধিও বাড়ছে। থার্ড টার্মিনাল হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এটি চালু হলে বিশ্বের বড় বড় বিমানবন্দরের রূপ লাভ করবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
তিনি বলেন, বর্তমানে বছরে প্রায় কোটির মতো যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করছেন। এর অর্থ হলো, বিমানবন্দরের প্রতি মানুষের আস্থা দিনদিন বাড়ছে। দেশের বাইরে যেসব প্রবাসী, আমরা যাদের ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা’ বলি, তাদের ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। তারা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
কামরুল ইসলাম আরও বলেন, সামনের দু-এক বছরের মধ্যে পুরো শাহজালালের চিত্র পাল্টে যাবে। এভিয়েশনের হাবে পরিণত হবে এই বিমানবন্দর। এখন যেমন কোটির ঘরে যাত্রী রয়েছে, আগামীতে বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনসের দুই কোটিরও বেশি যাত্রীর পদচারণা থাকবে এই বিমানবন্দরকে ঘিরে।
এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, থার্ড টার্মিনাল চালু হলে শাহজালাল বিমানবন্দর একটি হাবে পরিণত হবে। সেক্ষেত্রে যাত্রীর সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়ও।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলেছেন, যাত্রীর নিরাপত্তাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিতে এভিয়েশন সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা সদস্যরাও কাজ করে যাচ্ছেন। যাত্রীরা যেন হয়রানি, চুরি বা লাগেজ কাটার মতো ঘটনার শিকার না হন, আমরা সেটি নিশ্চিত করতে বদ্ধ পরিকর।
তারা বলেন, যাত্রীর সন্তুষ্টি আমাদের সন্তুষ্টি। আমাদের কারণে যেন তারা শাহজালালকে নিরাপদ মনে করে এটিকে ব্যবহার করতে পারেন, সেই চেষ্টাই আমাদের রয়েছে।