নয়াদিল্লি: ভারতের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানির উড়োজাহাজে বোমা হামলার আতঙ্ক অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০টিরও বেশি উড়োজাহাজে বোমা রাখা হয়েছে বলে ফোনে হুমকি এসেছে। এই হুমকির কারণে যাত্রীদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৬ দিনে মোট ৭০টি উড়োজাহাজে বোমার হুমকি পাওয়া গেছে, যা নিরাপত্তা বাহিনী এবং এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি তদন্তে নেমেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতের একটি টেলিভিশন চ্যানেল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, এই ধরনের হামলার হুমকি স্বাভাবিক যাত্রা উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর জন্য মারাত্মক বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এয়ারলাইন্স এবং সরকারী সংস্থাগুলো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এ ঘটনায় শনিবার (১৯ অক্টোবর) দেশটির উড়োজাহাজ চলাচল সুরক্ষা সংস্থা ব্যুরো অফ সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস) এর কর্মকর্তারা নয়াদিল্লিতে এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) সাথে রাজীব গান্ধী ভবনে দেখা করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেছেন যে , সিইও হুমকিগুলো মোকাবেলার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (এসওপি) অনুসরণ করতে বলেছেন এবং হুমকির পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের অবহিত থাকতে বলেছেন।
শনিবারই বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে ৩০টির বেশি বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এখন পর্যন্ত তদন্তে লন্ডন, জার্মানি, কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) ঠিকানাগুলি থেকে এই সপ্তাহে কিছু হুমকি এসেছে । তবে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) ব্যবহার করার কারণে তাদের আসল অবস্থান বের করা সম্ভব হয়নি।
২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ৩০টি ফ্লাইট বোমার হুমকি পেয়েছে। এই সপ্তাহে এয়ারলাইনগুলোর পাওয়া এমন হুমকির তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এর ফলে আকাশপথে একটি অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ এসব বোমা হামলার হুমকির কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে ফ্লাইটের উড্ডয়ন দেরি ও যাত্রাপথ ঘুরিয়ে জরুরি অবতরণ করানো হয়। এই নিয়ে ছয়দিনে ৭০টি ফ্লাইটের যাত্রা বিরতি এবং জরুরি অবতরণ করিয়ে নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হলো।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) ভিস্তারার পাঁচটি ফ্লাইট, আকাসা এয়ারের পাঁচটি ফ্লাইট এবং ইন্ডিগোর পাঁচটি ফ্লাইট বোমার হুমকি পেয়েছে। এছাড়া এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, আকাসা এয়ার, স্পাইসজেট, স্টার এয়ার এবং অ্যালায়েন্স এয়ারে ফ্লাইট হুমকি পেয়েছে।
এ বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বলেছিলেন, বেশির ভাগ বোমা হামলা কোনো ষড়যন্ত্রের কারণে ঘটেনি। বেশির ভাগ হুমকি পাওয়া গেছে অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং সামাজিক সাইটে মজা করার উদ্দেশ্যে।
এ কারণে বুধবার (১৬ অক্টোবর) ১৭ বছরের এক কিশোরকে মুম্বাই পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
দেশটির ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) পরামর্শ দিয়েছেন, পাঁচ বছরের জন্য ভুয়া কলকারীদের নো-ফ্লাই তালিকায় রাখতে হবে। আর উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর পরামর্শ, ভুয়া বোমার হুমকির কারণে তাদের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে।