ঢাকা: বাংলাদেশের নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণ ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনই স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
রবিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছেন জানিয়ে প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘এটি ছিল আমাদের নিয়মিত বৈঠক। আমরা দুই দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে।’
ভিসা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চিকিৎসা ও শিক্ষায় জরুরি ভিসা সীমিতভাবে চালু রয়েছে। তবে জনবল কম থাকায় বাংলাদেশিদের জন্য এখনই স্বাভাবিক হচ্ছে না ভারতের ভ্রমণ ভিসা।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যাদের জরুরি প্রয়োজন তাদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে। কারণ, আমাদের জনবল কম। সেজন্য ভিসার বিষয়টি স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না। আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে এটি শুরু করা সম্ভব হবে। তবে এখন জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্টদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা ভারতে গিয়ে তৃতীয় কোনো দেশের ভিসার আবেদন করছেন তাদের আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
এ অবস্থায় পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ভারত দ্রুত ঢাকা-দিল্লি ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি করার বিষয়ে তার দেশের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেছেন হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক দু’দেশের মানুষের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে। ভারত বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল, বাংলাদেশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল। পারস্পরিক নির্ভরশীলতার সম্পর্ক আরও এগিয়ে নেওয়া দরকার।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইস্যুতে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান প্রণয় ভার্মা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টের পর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশে দেশটির ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। এর পর চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে সীমিত আকারে ভিসা দিলেও গত আড়াই মাস বাংলাদেশি নাগরিকদের ভ্রমণ ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে ভারত।
ভারতীয় ভিসা জটিলতা নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার। এটি নিয়ে আমরা প্রশ্ন করতে পারি না। যেটি আমরা করতে পারি এবং করেছি, সেটি হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে বুঝিয়ে বলা হচ্ছে, আমাদের সমস্যার কথা।’
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ভিসা দেওয়া নিয়ে জটিলতা চলছে। এখন মাত্র ১০ শতাংশ ভিসা দেওয়া হচ্ছে। ভারতে শুধু জরুরি চিকিৎসা ভিসা ছাড়া আর সবকিছু বন্ধ। ১০ শতাংশ সক্ষমতায় তারা কাজ করছে। এটিতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু আমার আপত্তি হচ্ছে অন্য দেশের জন্য যে সমস্যা তৈরি সেখানে।’