যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী (৬০) ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়ার সচিব মহিবুল হকের (৬৪) তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ১৮ নভেম্বর রাত ২টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকা থেকে বাবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন ১৯ নভেম্বর তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তবে মূল নথি না থাকায় এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করে তাকে কারাগারে পাঠান।
গত ২০ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর ডিওএইচএস থেকে মহিবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ২১ নভেম্বর তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস আলম তাকে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। মামলার মূল নথি না থাকায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেন দেন। একইসঙ্গে রিমান্ড ও জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকে। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা হয়।
এদিকে পুলিশের একটি সুত্র জানায় বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়ার সচিব মহিবুল হকের বিরুদ্ধে সচিব থাকাকালীণ সময়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুনীতি আর লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিমানের সচিব থাকা কালীন সময়ে তিনি বেবিচকের সাবেক প্রধান প্রকেৌশলী ষুধেন্দ বিকাশ গোস্বামীর কাছ থেকে ১০ কোটি টাকার ঘুষ নিয়েছিলেন।
সিভিল এভিয়েশনের দুনীতিবাজ প্রকৌশলীদের কাছ থেকে গোস্বামী এই ঘুষ কালেকশন করে মহিবুল হককে দিয়েছিলেন। তবে এই ঘুষ কন্টিনিউ করতে না পারায় তিনি এক পর্যায়ে সুধেন্দ বিকাশ গোস্বামীকে চাকরী থেকে বহিস্কার করেন। শুধু গোস্বামীকে বহিস্কার নয় ঘুষ না দেওয়ায় তিনি আমিনুল হাসিব নামে বেবিচকের একজন সৎ এবং দক্ষ প্রকৌশলীকেও কোন ধরনের কারণ ছাড়া চাকরী থেকে বহিস্কার করেন। অভিযোগ আছে সাবেক সচিব মহিবুল হক –আব্দুল মালেক নামে একজন সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।
অভিযোগ আছে তিনি বেবিচক সচিব থাকাকালীন সময়ে কমপক্ষে ৫শ কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন। এই পুরো টাকা তিনি যুক্তরাস্টে বসবাসরত তার মেয়ের কাছে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন। রিমান্ডে এসব বিষয়ে তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে।