হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়ন প্রকল্পের ৮১২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
তারিক সিদ্দিক ছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হক এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান রয়েছেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইন্সটলেসন্স অব রাডার প্রকল্পের মাধ্যমে তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বলে জানান মো. আক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, তারিক সিদ্দিক তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আনাম, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মুহিবুল হক ও জনেন্দ্রনাথ সরকারকে প্রভাবিত করে এ প্রকল্প হাতে নেন। তারা আর্থিকভাবে লাভ হতে জি টু জি ভিত্তিতে ফ্রেঞ্চ কোম্পানি থালেস এলএএসকে এ কাজ দেন। এই সঙ্গে অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সহযোগী বানিয়ে কাজের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে, এ প্রকল্পে ক্রয় প্রক্রিয়ার বিদ্যমান বিধান লঙ্ঘন করে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি এবং নিজেদের পছন্দের ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করে বেআইনীভাবে স্থানীয় এজেন্ট অ্যারোনেস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে সম্পৃক্ত করে পরস্পর যোগসাজশে এ প্রকল্প হতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ মামলায় তারিক সিদ্দিকসহ মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রচলিত বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রকল্পে অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ২১ হাজার কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ প্রকল্প হতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ পরস্পর যোগসাজশে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আত্মসাত ও লুটপাট করেন। এ মামলায় তারিক সিদ্দিকসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়া, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প থেকে ২১২ কোটি টাকা এবং কক্সবাজার বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ে উন্নয়ন প্রকল্প থেকে ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।