
লন্ডনঃ ব্যবসায়িক সফর কখনই কভিড-১৯ মহামারীর আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্যারেন্ট কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস গ্রুপ (আইএজি) সম্প্রতি এ কথা জানিয়েছে। তবে উচ্চ খরচ করা অবকাশযাত্রীদের কারণে গত বছর কোম্পানিটি রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা অর্জন করেছে।
আইএজি বলছে, মহামারীর পর থেকে ব্যবসায়িক উদ্দেশে ভ্রমণের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অনেক কোম্পানি ভার্চুয়াল মিটিং ও অন্যান্য ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করায় এ ধরনের সফরের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস পেয়েছে। তবে অবসরযাপনকারী যাত্রীদের সংখ্যা ও তাদের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় এয়ারলাইনসটি ভালো মুনাফা অর্জন করতে পেরেছে।
কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের মতে, ব্যবসায়িক সফর কিছুটা বাড়লেও এটি আগের পর্যায়ে পুরোপুরি ফিরে যাবে না। বিশেষ করে স্বল্প সময়ের এবং স্বল্প দূরত্বের ভ্রমণের ক্ষেত্রে এ চাহিদা আগের মতো থাকবে না বলে অনুমান করছেন তারা।
এয়ারলাইনস গ্রুপটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে কোম্পানির পরিচালন মুনাফা ২২ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন বা ৪৩০ কোটি ইউরোতে পৌঁছেছে। গত শুক্রবার তারা শেয়ারহোল্ডারদের ১ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত ফেরত দেয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
২০২৪ সাল জুড়ে এবং ২০২৫ সালের এখন পর্যন্ত ভ্রমণের চাহিদা অব্যাহতভাবে শক্তিশালী রয়েছে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি। বিশেষ করে তাদের মূল বাজারগুলোয়। উল্লেখ্য, আইএজির মালিকানায় স্পেনের আইবেরিয়া ও আয়ারল্যান্ডের লিংগুসসহ পাঁচটি এয়ারলাইনস রয়েছে।
গ্লোবাল বিজনেস ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান পল এবোট সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক সফর এখন একটি “নতুন স্বাভাবিক” পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। যেখানে একদিনের ভ্রমণ সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর একটি প্রধান কারণ অনলাইন ভিডিও মিটিং।’
তিনি আরো জানান, মহামারীর পর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজসহ অন্যান্য বড় উড়োজাহাজ সংস্থা বিজনেস ও ফার্স্ট ক্লাস সিটগুলো পূর্ণ করতে সক্ষম হয়। তবে এসব আসন পূর্ণ হয় অবকাশযাত্রীদের মাধ্যমে, যারা উচ্চমূল্যে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক।
এদিকে গত সাত মাসে এয়ারলাইনসটির প্রিমিয়াম সিট (বিজনেস ক্লাস ও ফার্স্ট ক্লাস) আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি পূর্ণ ছিল বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী শন ডয়েল। তিনি বলেন, ‘উড়োজাহাজ সংস্থাটি “প্রিমিয়াম লেজার মার্কেট” বিকাশে বেশ সফল হয়েছে।’
আইএজির শেয়ারদর গত এক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। গ্রুপের আটলান্টিক মহাসাগরজুড়ে মূল রুটগুলোয় ভ্রমণের উচ্চ চাহিদা এবং ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী আর্থিক ফলাফলের কারণে বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ প্রকাশ করেছেন।