বিশেষ প্রতিনিধি : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় এবার স্বস্থি ফিরেছে। আগের মতো এবার কোন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি । সংশ্লিস্টরা বলেছেন, এটি সম্পুর্ণভাবে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সফিকুর রহমানের ক্যারিশমা এবং ম্যাকানিজম। তার নেতৃত্বে এবার প্রশ্নপত্র তৈরী, প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে নেওয়া, প্রশ্ন বিতরণ, পরীক্ষা নেওয়া, পরীক্ষার খাতা কাটা, মৌখিক পরীক্ষাসহ সবকিছু করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে তিনি এবং তার টিম কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন নিয়োগ পরীক্ষার প্রতিটি পর্ব বা ধাপ।
এবারের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন পত্র তৈরী করা হয়েছে ২৪ ঘন্টা আগে। একারণে প্রশ্ন ফাঁস করার সুযোগ পায়নি কেউ। প্রশ্নপত্র তৈরীর সঙ্গে সংশ্লিস্ট প্রতিটি সদস্য কমপক্ষে ৪৮ ঘন্টা সব ধরনের যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তাদেরকে মোবাইল ফোন পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন প্রিন্ট করা হয়েছে পরীক্ষা শুরুর আগে। যার কারণে এবারের কোন পরীক্ষা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের প্রশ্ন উঠেনি।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. সফিকুর রহমান এভিয়েশন নিউজকে বলেছেন, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয় এবং বিমান পরিচালণা পর্যদের নির্দেশনা অনুযায়ি এবারের নিয়োগ পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন তৈরী থেকে শুরু করে পরীক্ষার খাতা কাটা সব সম্পন্ন করা হচ্ছে। অর্থাৎ এবারের পরীক্ষা পদ্ধতি একটু ভিন্ন কায়দায় তৈরী করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র তৈরীও হয়েছে ভিন্ন কায়দায়। যার কারণে কোন পরীক্ষা নিয়ে এবার প্রশ্ন উঠেনি।
তিনি বলেন, বিমানের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরীর জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষার আগের দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের একজন প্রতিনিধির নেতৃত্বে এই কমিটি প্রশ্ন তৈরীর জন্য বিমানের একটি বিশেষ রুমে প্রবেশ করেন। এর আগে তারা তাদের সব মুঠো ফোন একটি তালাবদ্ধ রুমে রেখে দেন। এরপর প্রশ্নপত্র তৈরী করে ওই রাতে তারা ওই রুমেই অবস্থান গ্রহন করেন।
রাতে আর কারো সংগে এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযাগ করতে পারেননি প্রশ্নপত্র তৈরী কমিটির কোন সদস্য। পরদিন পরীক্ষার ঠিক আগে কমিটির সব সদস্য প্রশ্নপত্র নিয়ে সংশ্লিস্ট কেন্দ্রে যান এবং পরীক্ষা শেষ করে খাতা নিয়ে আসেন। এবারের পরীক্ষায় লিখিত পরীক্ষার জন্য ৮০ মার্কস এবং মৌখিক পরীক্ষার জন্য ২০ মার্কস নির্ধারিত। লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার মার্কস যোগ করে ফলাফল প্রকাশ করার নিয়ম। এমডি বলেন, তারপরও কোন ধাপে যদি কারো বিরুদ্ধে কোন ধরনের অনিয়মের প্রমান পাওয়া যায় তাহলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এর আগে বিমানের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা এবং নিয়োগ নিয়ে নানা কেলেংকারী হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে না হওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা শুরুর আগেই তা স্থগিত করা হয়।
অনেককে আটকও করা করেছে । বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জুনিয়র অপারেটর জিএসই (ক্যাজুয়েল), জুনিয়র টেইলর কাম আপহোলস্টার, প্রি প্রেস অ্যাসিস্ট্যান্ট, জুনিয়র ওয়েল্ডার জিএসই, জুনিয়র পেইন্টার জিএসই, জুনিয়র মেকানিক (টায়ার) জিএসই, জুনিয়র এমটি মেকানিক, জুনিয়র মেকানিক জিএসই (ক্যাজুয়েল), জুনিয়র ইলেক্ট্রিশিয়ান জিএসই (ক্যাজুয়াল) পদে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তা স্থগিত করা হয়।