হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নরওয়ে প্রবাসী যাত্রী সাঈদ উদ্দিনকে রক্তাক্ত হওয়ার ঘটনায় দুই নিরাপত্তাকর্মীকে বিমানবন্দরের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দুপুরে বেবিচক কার্যালয়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের অগ্রগতি নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া।
তিনি জানান, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির জমা দেওয়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তারা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করেছে। তদন্তের ভিত্তিতে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে (বাহিনীতে)। আরও তদন্ত হবে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তাকর্মীরা যথেষ্ট পোলাইট (নম্র) ছিল, তবে তাদের আরও পোলাইট হতে হবে। যাত্রীদেরও আরও সহনশীল আচরণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, সিলেট বিমান, কক্সবাজার বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, বগুড়ার আংশিক চলমান বিমানবন্দর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের চলমান প্রকল্প নিয়েও কথা বলেন। সিলেট বিমানবন্দর বাদে চলমান সব প্রকল্পের কাজ এ বছরই শেষ করা হবে বলেও জানান তিনি।
চলতি বছরের শেষের দিকে তৃতীয় টার্মিনালে অপারেশন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের ৯৯ শতাংশ শেষ। টার্মিনালের সামনে অ্যাপ্রোনের কাজও শেষ। সেটি শিগগিরই ব্যবহার করা যাবে। টার্মিনালের দুই কর্নারে সিলিং এবং বোর্ডিং ব্রিজের কিছু কাজ বাকী আছে। আগামী মার্চের মধ্যে এসব কাজ শেষ হবে। সব কাছে গিয়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত ভিভিআইপি ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আমরা একটি দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে এই বছরের মধ্যে টার্মিনালটা উদ্বোধন করার। সেটা যেকোনো মূল্যে। কারণ আপনারা জানেন এখানে আমাদের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এখানে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে যা জাইকা থেকে আমরা ঋণ নিয়েছি এবং সরকারও কিছু টাকা দিয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আমরা অক্টোবরে শুরু করব। অক্টোবরে না পারলে নভেম্বরে যেকোনো মূল্যে আমরা অপারেশনে যাব।
তৃতীয় টার্মিনালের পার্কিংয়ের ডিজাইন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টার্মিনালের কার পার্কিং ঠিক জায়গায় রাখা হয়নি। এটি সামনে রাখা হয়েছে। এটি সামনে না হলে ভবনের সৌন্দর্য আরো বাড়তো। কিন্তু জায়গা ছিল না হয়ত এ কারণে করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশনস ও মেন্টেইনেন্সের বিষয়ে শিগগিরই জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এই প্রকল্পটি নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো প্রকার কম্প্রমাইজ করব না।
বিমানবন্দর থেকে এপিবিএনকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এপিবিএনের সঙ্গে কারও কোনো ঝামেলা নেই। এপিবিএনের যেখানে ডিউটি করার কথা তারা সেখানেই করছে। মূলত তাদের কাজ বিমানবন্দরের বাহিরে। ২০১০ সালে তাদের বিমানবন্দরে দায়িত্ব দেওয়ার সময় এ কারণেই পাঠানো হয়েছিল। শুধু এপিবিএন নয়, কাস্টমস, আনসার, ইমিগ্রেশন পুলিশ, এভসেক যে যার মতো তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, এখন বিমানবন্দরে ২৪টি সংস্থা কাজ করছে। তারা সবাই মিলে নিরাপত্তার কাজ করছে। তাদের কেউ কারও শত্রু না। তবে তাদের কেউ যদি কাজে কোনো ভুল করে বসে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।